শনিবার, ২ মার্চ, ২০৩০

আমার কথা
কোনো জীবনই মৃত্যুহীন নয়, আমার জীবনও নয়। আমি থাকি বা না থাকি, ওয়েবজগত থাকবে বিশ্বজুড়ে। আমি চাই আমার লেখাগুলি থাকুক বিশ্বজুড়ে। যতদিন মানবসভ্যতা থাকবে, ততদিন পর্যন্ত আমার লেখা অক্ষত থাকবে ওয়েব জগতে। সেই সুপ্ত ইচ্ছা থেকেই এই ব্লগের ভাবনা। আমার সব লেখা হয়তো বই আকারে প্রকাশিত হবে না নানা কারণে, আর বই না-হলে আমার লেখাগুলি মানুষের কাছে পৌঁছবে কীভাবে! প্রকাশিত, অপ্রকাশিত সব লেখাই এখান থেকে পড়ে নেওয়া সম্ভব হবে। সারা পৃথিবীর বাঙালি পাঠকরা আমার লেখা পড়ুক। ইতিমধ্যে আমার তিনখানি বই প্রকাশিত হয়েছে। প্রথমটি কবিতার এবং পরের দুটি বইই প্রবন্ধের। 

1. বিপন্ন সত্তার চিতাভস্ম (কাব্যগ্রন্থ)    
2. লিঙ্গপুরাণ (প্রবন্ধ) 
3. গণিকামঙ্গল (প্রবন্ধ) 

বইগুলি যাঁরা সংগ্রহ করতে চান, তাঁরা কলেজ স্ট্রিটের অভিযান পাবলিশার্সের খোঁজ নিতে পারেন। ঠিকানা নিচে দিলাম : 

অভিযান বুক স্টোর 
10/2 এ, রমানাথ মজুমদার স্ট্রিট 
কলকাতা - 700009 (ইউনিভার্সিটি ইন্সটিটিউটের পিছনের রাস্তা)

রবিবার, ২৬ মার্চ, ২০১৭

লিঙ্গ-কবন্ধ-জাতক এবং সমকামী (ষষ্ঠ/শেষ পর্ব)



সমকামিতা (Homosexuality) একটি যৌন অভিমুখিতা, যার দ্বারা সমলিঙ্গের ব্যক্তির প্রতি যৌন আকর্ষণ বোঝায়। এইরূপ আকর্ষণের কারণে এক লিঙ্গের মানুষের মধ্যে যৌনসম্পর্ক ঘটতে পারে। প্রবৃত্তি হিসেবে সমকামিতা বলতে বোঝায় মূলত সমলিঙ্গের ব্যক্তির প্রতি "স্নেহ বা প্রণয়ঘটিত এক ধরনের যৌন প্রবণতা"। এই ধরনের সম্পর্কের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা ব্যক্তিগত বা সামাজিক পরিচিতি, এই ধরনের আচরণ এবং সমজাতীয় ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত কোনো সম্প্রদায়কেও এই শব্দটি দ্বারা নির্দেশ করা হয়।

উভকামিতা ও বিপরীতকামিতার সাথে সমকামিতা বিপরীতকামী-সমকামী অনবচ্ছেদের অন্তর্গত যৌন অভিমুখিতার তিনটি প্রধান ভাগের অন্যতম বলে স্বীকৃত। ব্যক্তির মনে কেমন করে কোনো নির্দিষ্ট যৌন অভিমুখিতার সঞ্চার হয় সেই ব্যাপারে বিজ্ঞানীদের মধ্যে মতৈক্য নেই। অনেক বিজ্ঞানী মনে করেন জিনগত, হরমোনগত এবং পরিবেশগত কারণ একত্রে যৌন অভিমুখিতা নির্ধারণের জন্য দায়ী। জীববিদ্যানির্ভর কারণগুলিকে বেশি সমর্থন করা হয়। এর অন্তর্গত হল জিন, ভ্রূণের ক্রমপরিণতি, এই দুই প্রভাবের মেলবন্ধন অথবা এই সব কিছুর সঙ্গে সামাজিক প্রভাবের মেলবন্ধন। যৌন-অভিমুখিতা নির্ধারণে যে সন্তানপালন বা শৈশবের অভিজ্ঞতার কোনো ভূমিকা আছে, তার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সমলিঙ্গের প্রতি যৌন আচরণের প্রভাবক হিসাবে এক পরিবেশে থাকার ভূমিকা মহিলাদের ক্ষেত্রে নগণ্য এবং পুরুষদের ক্ষেত্রে শূন্য। কেউ কেউ সমকামী যৌনাচরণকে অপ্রাকৃতিক মনে করলেও বৈজ্ঞানিক গবেষণা থেকে জানা গেছে সমকামিতা মানব যৌনতার একটি সাধারণ ও প্রাকৃতিক প্রকার মাত্র এবং অন্য কোনো প্রভাবকের অস্তিত্ব ছাড়া এটি মনের উপর কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলে না। অধিকাংশ মানুষের অভিজ্ঞতায় যৌনতার ব্যাপারে সচেতন পছন্দের কোনো ভূমিকা থাকে না। যৌন অভিমুখিতা পরিবর্তনের বিভিন্ন কর্মসূচির কার্যকারিতা সম্পর্কে যথেষ্ট প্রমাণ নেই।
মানবী (সোমনাথ) বন্দ্যোপাধ্যায়

নানা কারণে স্বঘোষিত সমকামীর সংখ্যা এবং মোট জনসংখ্যার মধ্যে সমলৈঙ্গিক সম্পর্কে আবদ্ধ মানুষের অনুপাত নির্ণয় করা দুঃসাধ্য। এই কারণগুলোর মধ্যে প্রধান হল সমকামভীতিজনিত বৈষম্যের কারণে অনেক সমকামীর প্রকাশ্যে তাঁদের যৌনতা না স্বীকার করা। অন্যান্য প্রাণীদের মধ্যেও সমকামী আচরণের নিদর্শন নথিভুক্ত হয়েছে। অনেক সমকামী মানুষ স্থায়ী পারস্পরিক সম্পর্কে আবদ্ধ আছেন, যদিও আদমশুমারির ফর্ম, রাজনৈতিক পরিস্থিতি ইত্যাদির আনুকূল্যে তাঁদের আত্মপ্রকাশের পথ নিরাপদ হয়েছে একেবারে সাম্প্রতিক কালে। মূল মনস্তাত্ত্বিক গঠনের দিক দিয়ে এই সম্পর্কগুলি বিষমকামী সম্পর্কের সমান। নথিভুক্ত ইতিহাস জুড়ে সমকামী সম্পর্ক এবং কার্যকলাপের প্রশস্তি ও নিন্দা -- উভয়েরই নিদর্শন মেলে, কেবল প্রকাশের ভঙ্গিমা ও সংশ্লিষ্ট সংস্কৃতিজনিত তারতম্য দেখা যায়। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগ থেকে সমকামীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে বিশ্বব্যাপী আন্দোলন শুরু হয়েছে, যার অন্তর্গত বিবাহ, দত্তক গ্রহণ ও সন্তানপালন, কর্মক্ষেত্রে সমানাধিকার, সামরিক পরিষেবা, স্বাস্থ্য পরিষেবায় সমানাধিকার, এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক সমকামীদের নিরাপত্তার স্বার্থে অ্যান্টি-বুলিং আইন। বর্তমানে হোমোসেক্সুয়াল শব্দটি বিদ্বৎসমাজে এবং চিকিৎসাবিজ্ঞানে ব্যবহৃত হলেও গেএবং লেসবিয়ানশব্দদুটি অধিক জনপ্রিয়। গেশব্দটির দ্বারা পুরুষ সমকামীদের বোঝানো হয় এবং নারী সমকামীদেরকে বোঝানো হয় লেসবিয়ানশব্দটির দ্বারা। পশ্চিমে গেশব্দটি সমকামী অর্থে প্রথম ব্যবহৃত হতে দেখা যায় সম্ভবত ১৯২০ সালে। তবে সে সময় এটির ব্যবহার একেবারেই সমকামীদের নিজস্ব গোত্রভুক্ত ছিল। মুদ্রিত প্রকাশনায় শব্দটি প্রথম ব্যবহৃত হতে দেখা যায় ১৯৪৭ সালে। লিসা বেন নামে এক হলিউড সেক্রেটারি “Vice Versa: America’s Gayest Magazine” নামের একটি পত্রিকা প্রকাশের সময় সমকামিতার প্রতিশব্দ হিসেবে গেশব্দটি ব্যবহার করেন।

শনিবার, ২৫ মার্চ, ২০১৭

লিঙ্গ-কবন্ধ-জাতক এবং সমকামী (পঞ্চম পর্ব)



হিজড়াদের মন ও মনন : নারী না-হয়েও হিজড়ারা নিজেদের নারীরূপে ভেবে থাকে। মহিলাদের পোশাক-আশাক, মহিলাদের অলংকার-কসমেটিক-শৃঙ্গার এদের পছন্দ অপ্রতিরোধ্য।ট্রেনে-বাসে লেডিস সিট, লেডিস কম্পার্টমেন্ট, লেডিস ট্রেন, লেডিস বাসে চড়ে বা উঠে যাতায়াত করে। ভুলেও এরা জেনারেল আসন বা কম্পার্টমেন্ট ব্যবহার করে না। শেষ মুর্হূতে ট্রেনের জেনারেল কম্পার্টমেন্টে উঠে পড়লেও পরের স্টপেজে নেমে লেডিস কম্পার্টমেন্টে ওঠে।পুজোর প্যান্ডেলে বা যাত্রার এদের মহিলাদের মধ্যেই দেখা যায়। বস্তুত এরা নিজেদেরকে অম্বার জাত বা উত্তরসূরী ভাবে। অম্বা মহাভারতের একটি অভিশপ্ত চরিত্র। গল্পটা একটু বলি : ভাই বিচিত্রবীর্যের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার জন্য স্বয়ংবর সভা থেকে ভীষ্ম অম্বাকে হস্তিনাপুরে নিয়ে এলেন। কিন্তু শাল্বরাজার প্রতি অনুরাগের কথা শুনে ভীষ্ম অম্বাকে মুক্তি দেন। অপরদিকে শাল্বরাজ অম্বাকে গ্রহণ করতে অস্বীকার করেন। এহেন ঘটনার অম্বা জোর গলায় ভীষ্মকে অভিযুক্ত করে। এখানেই শেষ নয়, অম্বা ভীষ্মকে ধ্বংস করবে এমন বিধ্বংসী তপস্যায় ব্রতী হলেন। শিব সন্তুষ্ট হয়ে অম্বাকে বর দিলেন। বললেন এ জন্মে নয়, পরজন্মে নপুংসক শিখণ্ডীহয়ে অম্বা জন্মগ্রহণ করবেন এবং ভীষ্মের মৃত্যুর কারণ হবে। হিজড়ারা এই কাহিনি জানে, জানে বলেই তারা নিজেদেরকে অম্বার সঙ্গে গভীর একাত্মতা অনুভব করে। হিজড়ারা বিশ্বাস করে তারা নপুংসক শিখণ্ডী এ জন্মের আগে তাদেরও ছিল স্বাভাবিক জীবন এবং পরের জন্মে আবার নারীজন্ম ফিরে পাবে।

স্বাভাবিক কর্মজীবনে হিজড়াদের ভূমিকা : হিজড়াদের সেই পরিচিতকর্মের বাইরে মূলস্রোতে কর্মরত অবস্থাতেও দেখা যাচ্ছে। কিছু খ্রিস্টান সংঘ হিজড়াদের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেন। ইউনিটারিয়ান একটি উদার ধর্মমত। তাদের মূল খ্রিস্টান ধর্মের সঙ্গে যুক্ত। ১৯৭৯ সালে তারাই সর্বপ্রথম হিজড়াদে পূর্ণ সদস্য হিসাবে গ্রহণ করে। and the first to open an Office of Bisexual, Gay, Lesbian, and Transgender Concerns in 1973. ১৯৮৮ সালে উইনিটারিয়ান উইনিভার্সালিস্ট অ্যাসোসিয়েশান প্রথম একজন হিজড়া ব্যক্তিতে মনোনীত করে। ২০০২ সালে শ্যন ডেন্নিসন প্রথম হিজড়া ব্যক্তি যিনি ইউনিটারিয়ান ইউনিভার্সালিস্ট মন্ত্রনালয়ে ডাক পান। ২০০৩ সালে ইউনাইটেড চার্চ অফ খ্রিস্ট সকল হিজড়া ব্যক্তিকে অন্তর্ভুক্ত করার পক্ষে মত দেয়। ২০০৫ সালে ট্রান্সজেন্ডার সারাহ জোনস চার্চ অফ ইংল্যান্ডের ধর্মযাজক হিসাবে নিয়োগ পান। ২০০৮ সালে ইউনাইটেড মেথোডিস্ট চার্চ জ্যুডিশিয়াল কাউন্সিল রায় দেন যে ট্রান্সজেন্ডার ড্রিউ ফনিক্স তার পদে বহাল থাকতে পারবেন। ওই একই বছরে মেথোডিস্টদের একটি সাধারণ বৈঠকে একাধিক হিজড়া ক্লারজির বিরুদ্ধে পিটিশান খারিজ করে দেয়া হয়। ভারতের বিহারে কালী হিজড়াপশ্চিম পাটনা কেন্দ্র থেকে জুডিসিয়াল রিফর্মসপার্টির প্রার্থী হিসাবে দাঁড়িয়েছিলেন। ১৯৯৫ সালে পশ্চিমবাংলার টিটাগড় পৌরভোটে ১৪ নং ওয়ার্ড থেকে হিজড়াবৈজয়ন্তীমালা মিশ্র ভোটপ্রার্থী হয়েছিলেন। ১৯৯৬ সালের লোকসভায় মহারাষ্ট্রের জালনা কেন্দ্র থেকে নির্দল হিজড়া প্রার্থী রমেশ ওরফে মালা ভোটপ্রার্থী হয়েছিলেন।

উত্তর চব্বিশ পরগণার নৈহাটীর কারখানা শ্রমিক বাবার মধ্যবিত্ত পরিবারে ছেলে হিসেবে জন্ম হয় সোমনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করে কলকাতার একটি কলেজ থেকে বাংলায় স্নাতক সম্পন্ন করেন তিনি। পড়াশোনা শেষে পশ্চিমবঙ্গের মাওবাদী (ঝাড়গ্রাম) অধ্যুষিত অঞ্চলের এক কলেজে বাংলার শিক্ষক হিসাবে যোগ দেন তিনি। এ সময়েই নারী ও তৃতীয় লিঙ্গের অধিকারের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে লেখালেখি ও সামাজিক আন্দোলনে সক্রিয় হয়ে ওঠেন। পরে ২০০৩ সালে জটিল এক অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে নিজেকে নারীতে রূপান্তরিত করেন সোমনাথ, এখন তিনিই মানবী বন্দ্যোপাধ্যায়। ৫১ বছর বয়সি মানবী বন্দ্যোপাধ্যায় এখন পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগর মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ। ২০১৫ সালের ৯ জুন থেকে তিনি নতুন দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন। ভারতে প্রথমবারের মতো তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) একজনকে কলেজের অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ করা হয়েছে। (এই পোস্টের সঙ্গে যে ফোটোগ্রাফটি দেওয়া হয়েছে, ইনিই মানবী বন্দ্যোপাধ্যায়) এটা তৃতীয় লিঙ্গদের জন্য একটা গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।সম্প্রতি অনেকে নিশ্চয় লক্ষ করেছেন যে, ভারত সরকারের একটি ট্র্যাফিক সংক্রান্ত বিজ্ঞাপন হিজড়াদের দিয়ে করানো হয়েছে।তবে বাংলাদেশে হাসিনা সরকার হিজড়াদেরকে ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণের কাজে লাগানো যায় কি না ভাবছেন।

শুক্রবার, ২৪ মার্চ, ২০১৭

লিঙ্গ-কবন্ধ-জাতক এবং সমকামী (চতুর্থ পর্ব)



লিঙ্গ কর্তনের পর আর-একটি প্রধান কাজ হল স্তন-দুটিকে পুষ্ট করা। এটি হিজড়াসমাজের অত্যন্ত গোপনে হয়, যাকে বলে ট্রেড সিক্রেট। লিঙ্গ কর্তনের কয়েকদিন পর নতুন হিজড়া একটু সুস্থ হয়ে উঠলে মহল্লার দলপতি তাকে Lyndiol (চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এই ট্যাবলেট খাওয়া অনুচিত) নামে এক ধরনের জন্ম নিরোধক ট্যাবলেট খাওয়ায়।বেশ কয়েক মাস ধরে এই ট্যাবলেট সেবন করানো হয় রোজ, নিয়মিত। এই ট্যাবলেটে ইথিলিন অস্ট্রাডাইওলের পরিমাণ একটু বেশি থাকে। ফলে শরীরে ইস্ট্রোজেন হরমোনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। হরমোনের কু-প্রভাবে স্তনগ্রন্থিতে স্নেহজাতীয় পদার্থ সঞ্চিত হতে থাকে এবং ধীরে ধীরে পুরুষ-বক্ষ থেকে নারী-স্তনের মতো স্ফীত ও পরিপুষ্ট হতে থাকে। নারীদের মতোই স্তনবৃন্তও ফুলে ওঠে।তবে যাদের আর্থিক সামর্থ্য থাকে তারা প্ল্যাস্টিক সার্জারির মাধ্যমে স্তন প্রতিস্থাপন বা সিলিকন ব্রেস্ট করিয়ে নেয়। খুবই ব্যয়সাপেক্ষ এই পদ্ধতি আমাদের দেশের মতো তৃতীয় বিশ্বে প্রায় অসম্ভব হলেও ধনতান্ত্রিক দেশগুলির হিজড়ারা সিলিকন ব্রেস্ট বানিয়ে নেয়। তবে তারা কিন্তু সকলেই লিঙ্গ কর্তন করে না। পর্ন-দুনিয়ায় এদের বেশ কদর আছে। এরা “Shemale”বা “Ladyboy” তবে সোমনাথ ওরফে মানবী মনে করেন, “মেয়ে হিজড়ে ছেলে হিজড়ে বলে কিছুই নেই। সকলেই সমান হিজড়ে। হিজড়ে দলে দু-রকম মানুষ আকুয়া আর নির্বাণ। আকুয়ারা পেনিস-টেসটিস এখনো কেটে ফেলে দেয়নি, আর নির্বাণ হল তারাই যারা কেটে ফেলে দিয়েছে। বহুচেরা মাতার (হিজড়াদের দেবতা) মন্দিরে কমলিয়ানামে এক বিশেষ হিজড়া সম্প্রদায় আছে। এরা পুরুষ। এরা একই সঙ্গে নিজেদের নারী ও পুরুষ হিসাবে কল্পনা করে। তাই লম্বালম্বিভাবে দেহের এক অংশে পুরুষের পোশাক এবং অপর অংশে নারীর বেশ ধারণ করে। এই কমলিয়াধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে।


হিজড়াসমাজের রীতিনীতি : সামাজিক মূলস্রোত থেকে এই সমাজ সম্পূর্ণই বিচ্ছিন্ন। হিজড়াসমাজের রীতিনীতি , আচার-ব্যবহার, ধর্মীয় অনুশাসন সবই আলাদা। প্রত্যেক হিজড়া মহল্লায় একজন দলপতি থাকেন। এরা গুরু-মাবলে পরিচিত। এই গুরু-মাই দলের অভিভাবক। গুরু-মায়ের আন্ডারে হিজড়ারা হল তার শিষ্য, চেলা বা মেয়ে। অবাধ্য হওয়া তো দূরের কথা, শিষ্যেরা গুরু-মাকে খুবই মান্য করে।শিষ্য সংগ্রহ করা এবং তাকে নির্দিষ্ট দায়িত্ব দিয়ে কাজে পাঠানো গুরু-মায়ের অন্যতম প্রধান কাজ। গুরু-মায়ের তত্ত্বাবধানে শিষ্যরা নাচ-গান-বাজনা শিখতে থাকে। শুধু নাচ-গান-বাজনা শিখলেই হয় না, তালি দেওয়া শেখাটাও অত্যন্ত জরুরি।সবাই জানেন, হিজড়াদের তালি বিশেষ ধরনের। দুটি হাতের চেটোকে ৯০ ডিগ্রি কোণ করে এই তালি দেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ, ২০১৭

লিঙ্গ-কবন্ধ-জাতক এবং সমকামী (তৃতীয় পর্ব)



ঐতিহাসিক ও নৃতাত্ত্বিক নানা গবেষণা থেকে জানা যায় যে, বহুবিবাহ, উপপত্নী (বাঁদি) ও হারেম ব্যবস্থা গড়ে ওঠার কারণে খোজা ব্যবস্থারও উদ্ভব ঘটে। হারেমের নারীদের উপর নজর রাখার জন্য খোজাকৃত পুরুষ প্রহরী নিয়োগ করা হত। সাধারণত রণাঙ্গণে বন্দি তরুণ সৈনিকদের খোজা করা হত। খ্রিস্টপূর্ব ৮১১ থেকে ৮০৮ অব্দের আসিবিয়ার রানিমাতা সামুরামাত নিজ হাতে তার এক ক্রীতদাসকে খোজাকরেছিলেন। একটি উপকথায় তাকে সেমিরা মিস বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আসিবিয়ার রানিমাতা কেন তার ক্রীতদাসকে খোজাকরেছিলেন ইতিহাসে তার বিবরণ না-থাকলেও অনেক গবেষক মনে করেন রানির বিকৃত যৌন-লালসা নিবৃত্ত করার জন্য হতভাগ্য ক্রীতদাসকে বিকলাঙ্গ করা হয়েছিল। এরপর বিভিন্ন দেশে খোজাকরা হয়েছে। আর এই নিষ্ঠুরতা সংঘটিত হয়েছে শাসক, অভিজাত শ্রেনি এবং ধনাঢ্য ব্যক্তিদের মহলেও। শুধু যে রাজা-বাদশা বা অভিজাত শ্রেণির মহলে খোজা তৈরি হত তা কিন্তু নয়, ধর্মীয় কারণে অনেকেই খোজাকরণ বরণ করেছে, ইতিহাসে এর প্রমাণও আছে। ওল্ড টেস্টামেন্টে খোজার উল্লেখ আছে। ম্যাথুর প্রবচনে আছে -- একদল পুরুষত্বহীন মানুষ আছে যারা মাতৃগর্ভ থেকেই অসম্পূর্ণ অবস্থাতে ভূমিষ্ট হয়েছে। আর একদল আছে যাদের অন্য মানুষ খোঁজা করেছে। তৃতীয় দলের খোজা যারা তারা স্বর্গের কামনায় স্বেচ্ছায় পুরুষহীন হয়েছে। এই কথার পরিপ্রেক্ষিতেই বোধহয় একজন খ্রিস্টান ধর্মযাজক ঘোষণা করেছিলেন -- একমাত্র কামনাশূন্য খোজার কাছেই স্বর্গের দুয়ার খোলা রয়েছে। কামনা-বাসনা শূন্য হওয়ার জন্য অনেক ধর্মপ্রচারক খোজাদের স্বপক্ষে তাদের অভিমত ব্যক্ত করেছেন। কামনাশূন্য সাধনা করার জন্য বিগত খ্রিস্টান সাধু ওরিজেন তার পুরুষত্ব বিসর্জন দিয়েছিলেন। ১৭৭২ সালে রাশিয়ায় একটি গোপন ধর্মীয় গোষ্ঠীর উদ্ভব ঘটেছিল, যাঁরা স্বেচ্ছায় খোজাকরণ বরণ করে নিতেন। এদের বিশ্বাস ছিল মানুষের দেহে আদম এবং ইড থেকে যে নিষিদ্ধ ফল যৌন-তাড়না করে বেড়াচ্ছে, খোজাকরণের মাধ্যমে তার অবসান ঘটানো সম্ভব। মানব এবং মানবীর জনক এবং জননী হওয়ার যোগ্যতা এই নিষিদ্ধ অদৃশ্য ফল থেকেই আসে, আর লিঙ্গ ও যোনির ব্যবহারে আর একটি মাত্র সন্তানের জন্ম হয়। এ কারণেই রাশিয়ার ওই গোপন সংগঠনের পুরুষ সদস্যরা স্বেচ্ছায় খোজা এবং নারীরা তাদের স্তন কেটে কামনাশূন্য হতে চেয়েছিল।


খ্রিস্টানদের মধ্যে স্বর্গ প্রাপ্তির আশায় শুধু খোজাকরণ বরণ করত, তা কিন্তু নয়। গির্জায় প্রার্থনা সংগীত গাওয়ার জন্য খোজাদের কদর করা হত। সিসটান চ্যাপেলে প্রার্থনা সংগীত গাওয়ার জন্য স্বয়ং পোপ তাদের আহ্বান করতেন। খোজাদের আহ্বান করার পিছনে যুক্তি ছিল খোজাদের কণ্ঠস্বর সমান তেজি, সমান গভীর এবং সমান নিখাদ। খ্রিস্ট সম্প্রদায় এই সংগীত আগ্রহভরে শ্রবণ করত, তাদের বিশ্বাস ছিল ঈশ্বরকে মুগ্ধ করার জন্য খোজা কণ্ঠের সংগীত অবশ্যই গীত হওয়া প্রয়োজন। এই ধারণা থেকে ইতালির অনেক বিখ্যাত গায়ক স্বেচ্ছায় খোজা হয়ে গিয়েছিলেন।

বুধবার, ২২ মার্চ, ২০১৭

লিঙ্গ-কবন্ধ-জাতক এবং সমকামী (দ্বিতীয় পর্ব)

প্রাচীন গ্রিসের সংস্কৃতিতে প্রথম প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদের মধ্যে গভীর প্রণয় সম্পর্কের উল্লেখ পাওয়া যায় ইলিয়াডমহাকাব্যে। হোমার অ্যাকিলিস ও প্যাট্রোক্ল্যাসের সম্পর্কটিকে যৌন সম্পর্ক বলেননি। চিত্রকলা ও পাত্রচিত্রে প্যাট্রোক্লাসের দাড়ি আঁকা হত। অপরদিকে গ্রিক সমাজে অ্যাকিলিসের স্থান দেবতুল্য হলেও তাঁর চিত্র উলঙ্গই আঁকা হত। এর ফলে কে "এরাস্টেস" এবং কে "এরোমেনোস" ছিলেন, তাই নিয়ে মতানৈক্য দেখা যায়। হোমারীয় ঐতিহ্যে প্যাট্রোক্ল্যাস ছিলেন বয়সে বড়ো; কিন্তু অ্যাকিলিস ছিলেন বেশি শক্তিশালী। অন্যান্য প্রাচীন গল্পের মতে, অ্যাকিলিস ও প্যাট্রোক্ল্যাস ছিলেন নিছক বন্ধু। ঐতিহাসিক প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ প্রণয়ীযুগলের মধ্যে এথেন্সের পাউসানিয়াস ও ট্র্যাজিক কবি আগাথন বিখ্যাত। আগাথনের বয়স ছিল ত্রিশের বেশি। মহামতি আলেকজান্ডার ও তাঁর বাল্যবন্ধু হেফাস্টনের সম্পর্কও একই ধরনের ছিল বলে মনে করা হয়।


স্যাফো নারী ও বালিকাদের উদ্দেশ্য করে অনেকগুলি কবিতা রচনা করেছিলেন। ইনি লেসবোস দ্বীপের বাসিন্দা। স্যাফো সম্ভবত ১২,০০০ লাইনের কবিতা লিখেছিলেন নারীদের জন্য। তবে তার মধ্যে মাত্র ৬০০ লাইনরই সন্ধান পেলে। তাই স্যাফো প্রাচীনকালের নারী-সমকামী কবি হিসাবে পরিচিত। তিনি গ্রিক সমাজে "থিয়াসোস" বা অল্পশিক্ষিতা নারী হিসাবে পরিচিত ছিলেন। সেযুগের সমাজে নারীজাতির মধ্যেও সমকামিতার প্রচলন ছিল। নগররাষ্ট্রের উদ্ভবের পর বিবাহপ্রথা সমাজ ও সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হয়ে ওঠে এবং মেয়েরা গৃহবন্দী হয়ে পড়ে। "থিয়াসোস"-রা হারিয়ে যায়। স্যাফোর জন্মস্থান লেসবস থেকেই তো অভিধানে জায়গা পেয়েছে লেসবিয়ান শব্দটি। সামাজিকভাবে নারীর সমকামিতার কোনো স্থান হয়নি। সাধারণ ভাবে নারীর সমকামিতার ঐতিহাসিক প্রামাণ্য তথ্য বেশি নেই।

সমকামী বিষয়বস্তু সম্পর্কে দীর্ঘকাল নীরব থাকার পর ঐতিহাসিকরা এ বিষয়ে আলোচনা শুরু করেন। এরিক বেথে ১৯০৭ সালে এ বিষয়ে আলোচনা শুরু করেছিলেন। পরে কে. জি. ডোভারাও গবেষণা চালিয়ে যান। গবেষণায় জানা গেছে, প্রাচীন গ্রিসে সমকামিতার খোলাখুলি প্রচলন ছিল। এমনকি সরকারি অনুমোদনও ছিল। খ্রিস্টপূর্ব সপ্তম শতাব্দী থেকে রোমান যুগ পর্যন্ত এই অবস্থা চলেছিল। কোনো কোনো গবেষকদের মতে সমকামী সম্পর্ক, বিশেষত পেডেরাস্টির প্রচলন ছিল উচ্চবিত্ত সমাজের মধ্যেই। সাধারণ মানুষের মধ্যে এই প্রথার প্রচলন খুব একটা ছিল না। ব্রুস থর্নটনের মতে, অ্যারিস্টোফেনিসের কৌতুক নাটকগুলিতে গ্রহীতার স্থান গ্রহণকারী সমকামীদের প্রতি উপহাস করার প্রবণতা থেকে বোঝা যায়, পুরুষ সমকামিতাকে সাধারণ মানুষ ভালো চোখে দেখত না। ভিক্টোরিয়া ওল প্রমুখ অন্যান্য ঐতিহাসিকেরা বলেছেন, এথেন্সে সমকামী সম্পর্ক ছিল "গণতন্ত্রের যৌন আদর্শ"। এটি উচবিত্ত ও সাধারণ মানুষ -- উভয় সমাজেই সমাজভাবে প্রচলিত ছিল। হার্মোডিয়াস ও অ্যারিস্টোগেইটন নামে দুই হত্যাকারীর ঘটনা থেকে তা প্রমাণিত হয়। এমনকি যাঁরা বলেন যে, পেডেরাস্টি উচ্চবিত্ত সমাজেই সীমাবদ্ধ ছিল, তাঁরাও মনে করেন যে এটি ছিল "নগররাষ্ট্রের সামাজিক কাঠামোর অঙ্গ"।

মঙ্গলবার, ২১ মার্চ, ২০১৭

লিঙ্গ-কবন্ধ-জাতক এবং সমকামী (প্রথম পর্ব)



“I want to suck your big penis” চমকাবেন না। ফেসবুকের ইনবক্সে এরকম মেসেজ পাওয়ার এরকম নাছোড় অভিজ্ঞতা নিশ্চয়ই অনেকেরই হয়েছে। ফেসবুকে এরকম অনেক নারীপুরুষ তাঁদের যৌনসঙ্গী খুঁজতে সরাসরি এইভাবে প্রস্তাব রাখে। এঁরা আদতে সমকামী। পুরুষ খোঁজে পুরুষকে, নারী খোঁজে নারীকে। প্রথম পক্ষ গে’, অপরপক্ষ লেসবিয়ান। বাজারি নাম হিজড়েবা হিজড়া

হিজড়া দক্ষিণ এশিয়ায় ব্যবহৃত একটি পরিভাষা -- বিশেষ করে ভারতের ট্রান্সসেক্সুয়াল বা ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তিকে বুঝিয়ে থাকে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় ক্রোমোজোমের ত্রুটির কারণে জন্মগত যৌন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, যাদের জন্মপরবর্তী লিঙ্গ নির্ধারণে জটিলতা দেখা দেয়, মূলত তারাই হিজড়া। হিজড়া শব্দের অপর অর্থ হচ্ছে ট্রান্সজেন্ডার’, ট্রান্সজেন্ডার বলতে এমন এক লৈঙ্গিক অবস্থাকে বোঝায় যা দৈহিক বা জেনেটিক কারণে মেয়ে বা ছেলে কোনো শ্রেণিতে পড়ে না। প্রকৃতিতে কিছু মানুষ নারী এবং পুরুষের যৌথ বৈশিষ্ট্য নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। বাংলা ভাষায় এই ধরনের মানুষগুলো হিজড়া নামে পরিচিত। সমার্থক শব্দে শিখণ্ডী, বৃহন্নলা, তৃতীয় লিঙ্গ, উভলিঙ্গ, নপুংসক, ট্রান্সজেন্ডার (ইংরেজি), ইনুখ (হিব্রু), মুখান্নাতুন (আরবি), মাসি, বৌদি, চাচা, তাউ, ওস্তাদ, মাংলিমুখী, কুলিমাদর, ভিলাইমাদর, মামা, পিসি, অজনিকা ষণ্ড, অজনক, সুবিদ, কঞ্চুকী, মহল্লক, ছিন্নমুষ্ক, আক্তা, পুংস্তহীন ইত্যাদি। হরিদ্বারে হিজড়াদের সকলে তাওজি বা পণ্ডিতজি বলে পৃথিবীর বিভিন্ন ধর্মে হিজড়াদের সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।


ইসলাম ধর্মে হিজড়া : হজরত ইব্রাহিমের বংশধরদের মাধ্যমে পৃথিবীর বুকে প্রচারিত ধর্মগুলোকে একসঙ্গে বলা হয় ইব্রাহিমীয় ধর্ম। ইসলাম, খ্রিস্টধর্ম, ইহুদি ধর্ম -- এগুলো সবই ইব্রাহিমীয় ধর্ম। প্রতিটি ইব্রাহিমীয় ধর্ম পুরুষ এবং নারী সৃষ্টির ব্যাপারে আদম এবং হাওয়া (ইভ)-এর গল্প বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহ প্রথমে মাটি থেকে তৈরি করেন আদমকে। আদমের বুকের পাঁজর দিয়ে তৈরি করেন বিবি হাওয়াকে। তাহলে আল্লাহ তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ কিভাবে তৈরি করেন ? নারী ও পুরুষের পাশাপাশি তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ বা হিজড়া কীভাবে সৃষ্টি করা হল, এই বিষয়ে পৃথিবীর কোনো ধর্মেই আলোচনা করা হয়নি।

ইসলামে তৃতীয় লিঙ্গ বা হিজড়াদের মুখান্নাতুনহিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। আরবি ভাষায়মুখান্নাতুনবলতে মেয়েদের মত আচরণকারী পুরুষদেরকে বোঝানো হয়। এক্ষেত্রে যেহেতু শুধুমাত্র মেল টু ফিমেল ট্রান্সসেক্সুয়ালদের বোঝানো হয়, তাই আরবি মুখান্নাতুনহিব্রু সারিস বা ইংরেজি ইউনুখ”-এর সমার্থক শব্দ নয়। কোরানে কোথাও মুখান্নাতুনসম্পর্কে কিছু বলা হয় নাই। কিন্তু হাদিসে মুখান্নাতুন”-এর উল্লেখ পাওয়া যায়।

আন নবি বর্ণিত হাদিস থেকে জানা যায়, একজন মুখান্নাতুনহচ্ছে সেই পুরুষ, যার চলাফেরায়, চেহারায় এবং কথাবার্তায় নারী আচরণ বহন করে। তারা দুই প্রকারের : প্রথম প্রকারের হচ্ছে তারাই যারা এই ধরনের আচরণ ইচ্ছাকৃতভাবে করে না এবং তাদের এই ব্যবহারে কোনো দোষ নেই, কোনো অভিযোগ নেই, কোনো লজ্জা নেই যতক্ষণ পর্যন্ত তারা কোনো অবৈধ কাজ না করে এবং পতিতাবৃত্তিতে না জড়িয়ে পড়ে। দ্বিতীয় শ্রেণির ব্যক্তি হচ্ছে তারাই যারা অনৈতিক উদ্দেশ্যে মেয়েলি আচরণ করে। হজরত ইবনে আব্বাস বলেছেন হিজড়ারা জিনদের সন্তান। এক ব্যক্তি আব্বাসকে প্রশ্ন করেছিলেন এটা কেমন করে হতে পারে ? জবাবে তিনি বলেছিলেন – “আল্লাহ ও রসুল (সাঃ) নিষেধ করেছেন যে মানুষ যেন তাঁর স্ত্রীর পিরিয়ড বা মাসিক স্রাব চলাকালে যৌনমিলন না করে। সুতরাং কোনো মহিলার সঙ্গে তার ঋতুস্রাব হলে শয়তান তার আগে থাকে এবং সেই শয়তান দ্বারা ওই মহিলা গর্ভবতী হয় এবং হিজড়া সন্তান (খুন্নাস) প্রসব করে (সুরা বাণী ইস্রাইল আর রাহমান-৫৪, ইবনে আবি হাতিম, হাকিম তিরমিজি)। ইসলামী দেশগুলির মধ্যে ইরানে সব থেকে বেশি রুপান্তরকামী অপারেশন করা হয়। তারা তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তিকে যে-কোনো এক লিঙ্গে রুপান্তর হওয়ার সুযোগ দেয়।

আমার কথা কোনো জীবনই মৃত্যুহীন নয়, আমার জীবনও নয়। আমি থাকি বা না থাকি, ওয়েবজগত থাকবে বিশ্বজুড়ে। আমি চাই আমার লেখাগুলি থাকুক বিশ্বজুড়ে। যত...